wbssc online application 2025 -পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগ ২০২৫: এক নতুন দিগন্তের সূচনা

wbssc online application 2025:- পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (WBSSC) এর মাধ্যমে নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের জন্য বহু প্রতীক্ষিত আবেদন প্রক্রিয়া আজ, ১৬ জুন, ২০২৫, বিকেল ৫টা থেকে (wbssc online application 2025 )শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শুরু হওয়া এই নিয়োগ প্রক্রিয়া পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মোট ৩৫,৭২৬টি শূন্যপদ পূরণ করা হবে, যার মধ্যে নবম-দশম শ্রেণির জন্য ২৩,২১২টি এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য ১২,৫১৪টি পদ রয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়া শিক্ষক পদপ্রার্থীদের জন্য একটি বিরাট সুযোগ হলেও, চাকরি হারানো শিক্ষকদের আন্দোলন এবং আদালতের চূড়ান্ত রায়ের অনিশ্চয়তা এই প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে।

শূন্যপদ ও আবেদন প্রক্রিয়া

পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিপুল সংখ্যক শূন্যপদ রয়েছে। নবম-দশম শ্রেণির জন্য ২৩,২১২টি পদ এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য ১২,৫১৪টি পদ নিয়োগ করা হবে। বিষয়ভিত্তিক এবং মাধ্যমভিত্তিক শূন্যপদের বিস্তারিত তালিকা কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। তবে, কমিশন জানিয়েছে যে চূড়ান্ত শূন্যপদের সংখ্যা কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে।

আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অনলাইনে হবে, এবং প্রার্থীরা কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন শুরু হয়েছে ১৬ জুন, ২০২৫, বিকেল ৫টা থেকে এবং চলবে ১৪ জুলাই, ২০২৫, বিকেল ৫টা পর্যন্ত। আবেদন ফি জমার শেষ তারিখ ১৪ জুলাই, ২০২৫, রাত ১১:৫৯ পর্যন্ত। লিখিত পরীক্ষা সম্ভবত সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে, এবং ফলাফল অক্টোবর ২০২৫-এর চতুর্থ সপ্তাহে প্রকাশিত হবে। ইন্টারভিউ নভেম্বর ২০২৫-এর প্রথম থেকে তৃতীয় সপ্তাহে এবং প্যানেল প্রকাশিত হবে ২৪ নভেম্বর, ২০২৫। কাউন্সেলিং ও সুপারিশ প্রক্রিয়া শুরু হবে ২৯ নভেম্বর, ২০২৫ থেকে।

আবেদন ও নিয়োগের গুরুত্বপূর্ণ তারিখ

বিবরণতারিখ
অনলাইন আবেদন শুরু(wbssc online application 2025 )১৬ জুন, ২০২৫ (বিকেল ৫টা)
আবেদন জমার শেষ তারিখ১৪ জুলাই, ২০২৫ (বিকেল ৫টা)
আবেদন ফি জমার শেষ তারিখ১৪ জুলাই, ২০২৫ (রাত ১১:৫৯)
লিখিত পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখসেপ্টেম্বর, ২০২৫ (প্রথম সপ্তাহ)
ফলাফল প্রকাশঅক্টোবর, ২০২৫ (চতুর্থ সপ্তাহ)
ইন্টারভিউনভেম্বর, ২০২৫ (প্রথম-তৃতীয় সপ্তাহ)
প্যানেল প্রকাশ২৪ নভেম্বর, ২০২৫
কাউন্সেলিং ও সুপারিশ শুরু২৯ নভেম্বর, ২০২৫

wbssc online application 2025

নতুন নিয়োগ বিধি: কী বদলেছে?

২০২৫ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন উপাদানের নম্বর বণ্টন নিম্নরূপ:

  • লিখিত পরীক্ষা: ৬০ নম্বর (আগে ছিল ৫৫)
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা: সর্বোচ্চ ১০ নম্বর (আগে ছিল ৩৫)
  • পূর্ববর্তী শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা: সর্বোচ্চ ১০ নম্বর (নতুন সংযোজন)
  • মৌখিক ইন্টারভিউ: ১০ নম্বর
  • লেকচার ডেমোস্ট্রেশন: ১০ নম্বর (নতুন সংযোজন)

এই পরিবর্তনের মাধ্যমে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা এবং শ্রেণিকক্ষে পড়ানোর দক্ষতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যেসব প্রার্থী ইতিমধ্যে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, বিশেষ করে যাঁরা সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন, তাঁরা পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা এবং লেকচার ডেমোস্ট্রেশনের জন্য বাড়তি নম্বর পেতে পারেন।বয়সের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি অনুযায়ী ৪০ বছর। তবে, তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থীদের জন্য সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বয়সের ছাড় রয়েছে।

নির্বাচন প্রক্রিয়া ও পরীক্ষা কাঠামো

নিয়োগ প্রক্রিয়াটি বেশ কয়েকটি ধাপে বিভক্ত:

  1. লিখিত পরীক্ষা (OMR ভিত্তিক): এই পরীক্ষায় ৬০ নম্বর থাকবে। প্রশ্নপত্র বাংলা এবং ইংরেজি ভাষায় থাকবে, তবে ভাষার বিষয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ভাষায় প্রশ্নপত্র দেওয়া হবে। প্রার্থীরা OMR শিটের কপি রাখতে পারবেন এবং উত্তরপত্র নিয়ে আপত্তি জানানোর সুযোগ পাবেন।
  2. একাডেমিক স্কোর: স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর নম্বরের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১০ নম্বর দেওয়া হবে।
  3. পূর্ববর্তী শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা: প্রতি বছরের অভিজ্ঞতার জন্য ২ নম্বর করে, সর্বোচ্চ ১০ নম্বর দেওয়া হবে।
  4. মৌখিক ইন্টারভিউ: প্রার্থীদের ব্যক্তিত্ব এবং যোগাযোগ দক্ষতা পরীক্ষার জন্য ১০ নম্বর।
  5. লেকচার ডেমোস্ট্রেশন: শিক্ষকতার দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য ১০ নম্বর।

এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রার্থীদের সামগ্রিক যোগ্যতা এবং শিক্ষকতার দক্ষতা মূল্যায়ন করা হবে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ও চাকরিহারা শিক্ষকদের আন্দোলন

এই নিয়োগ (wbssc online application 2025 ) প্রক্রিয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ৩১ মে-র মধ্যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হয়েছে এবং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। তবে, যেসব শিক্ষক আগে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের জন্য এই প্রক্রিয়া পুরোপুরি স্বস্তি নিয়ে আসেনি। রিভিউ এবং কিউরেটিভ পিটিশনের ফলাফলের ওপর তাঁদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।চাকরি হারানো শিক্ষকদের একটি বড় অংশ এই ফর্ম পূরণ প্রক্রিয়ায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁরা দাবি করছেন, রিভিউ এবং কিউরেটিভ পিটিশনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হোক। এই দাবিতে তাঁরা আমরণ অনশনে বসেছেন এবং আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। ইতিমধ্যে অনশনে ৬ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আন্দোলনকারীরা শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি লিখে তাঁদের দাবির পক্ষে সমর্থন চেয়েছেন।

উপসংহার

২০২৫ সালের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। বিপুল সংখ্যক শূন্যপদ, নতুন নিয়োগ বিধি এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এই প্রক্রিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। তবে, চাকরি হারানো শিক্ষকদের আন্দোলন এবং আদালতের চূড়ান্ত রায়ের অনিশ্চয়তা এই প্রক্রিয়ার ওপর ছায়া ফেলেছে। চাকরিপ্রার্থীদের জন্য এটি একটি বড় সুযোগ হলেও, পুরনো শিক্ষকদের জন্য এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। সকলের দৃষ্টি এখন নিয়োগ প্রক্রিয়ার সফল সমাপ্তি এবং আদালতের চূড়ান্ত রায়ের দিকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here