ষষ্ঠ বেতন কমিশন ও মহার্ঘ্য ভাতা: সুপারিশ, বাস্তবতা ও বিতর্ক

ভূমিকা-মহার্ঘ্য ভাতা (Dearness Allowance বা DA) হল সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সুবিধা, যা মূলত মুদ্রাস্ফীতির চাপ থেকে আয় রক্ষা করার জন্য প্রদান করা হয়। পশ্চিমবঙ্গের ষষ্ঠ বেতন কমিশন এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুপারিশ করেছে, যা সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, রাজ্য সরকার তাদের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী ডিএ নির্ধারণ করতে পারে। পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিগত কয়েক বছরে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে—করোনা মহামারী, রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, এবং কেন্দ্রীয় অনুদানের ঘাটতি এইসব কারণে রাজ্যের খরচের উপর বাড়তি চাপ পড়েছে। ফলে, রাজ্য সরকার ডিএ বৃদ্ধিতে অনেক সময় সংযম দেখাতে বাধ্য হয়েছে।

সরকারি কর্মচারীরা মনে করেন, তাদের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লেও ডিএ বৃদ্ধি সেই অনুপাতে হয় না। অনেকেই দাবি করেন, ডিএ-র হার যদি কেন্দ্রীয় সরকারের মতো নির্ধারিত হত, তাহলে তারা আরও সুরক্ষিত থাকতেন।


ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ (6th Pay Commission Report)-

WB 6th Pay Commission Report Downloads

WB 6th Pay Commission Report Downloads

Circular / Memo / Order No.Circular / Memo / Order DateCategorySubjectDownload
321-F(P)17/01/20176th Pay CommissionExclusion of Sundarban Development Board from the purview of the 6th Pay Commission Download
265-F(P)13/01/20176th Pay CommissionWest Bengal State Handloom Weavers Co-Operative Society Ltd. has been included into 6th Pay Commission Download
4132-F(P)04/08/20166th Pay CommissionResolution in terms of reference of the 6th Pay Commission Download
3242-F(P)17/06/20166th Pay CommissionPartial amendment of Resolution No. 8071-F(P) dt. 27.11.2015 Download
2762-F(P)25/05/20166th Pay CommissionExtension of Sixth Pay Commission, West Bengal Download
1742-F(P)29/03/20166th Pay CommissionShri Mrigen Maity has been Exclude from the membership of the 6th Pay Commission. Download
1559-F(P)17/03/20166th Pay CommissionEngagement of Smt. Ruma Mukherje as Member of the 6th Pay Commission on part-time basis. Download
1205-F(P)01/03/20166th Pay CommissionThe Governor as been pleased to include Shri Amar Kanti Sarkar, IPS as another Member of the 6th Pay Commission. Download
1055-F(P)24/02/20166th Pay CommissionSmt. Ruma Mukherjee appointed as another Member in the 6th Pay Commission. Download
925-F(H)18/02/20166th Pay CommissionInviting memorandum for different Unions, Associations as mentioned in the notice. Download
NAN.A.6th Pay CommissionReport of the Sixth Pay Commission, West Bengal, Volume I – Part I Download (105.67 KB)
NAN.A.6th Pay CommissionReport of the Sixth Pay Commission, West Bengal, Volume I – Part II Download (94.56 KB)
NAN.A.6th Pay CommissionAddendum to the Vol I of the Report of the Sixth Pay Commission for Non-Teaching employees of State Aided Universities Download (4.20 KB)
NAN.A.6th Pay CommissionReport of the Sixth Pay Commission, West Bengal, Volume II – Book I Download (86.96 KB)
NAN.A.6th Pay CommissionReport of the Sixth Pay Commission, West Bengal, Volume II – Book II Download (88.46 KB)
NAN.A.6th Pay CommissionReport of the Sixth Pay Commission, West Bengal, Volume II – Book III Download (87.30 KB)
Disclaimer: This tool is created for informational purposes only. The links provided are sourced from publicly available government websites. Users are advised to verify the authenticity and latest updates directly from official government publications. We are not responsible for any discrepancies or outdated information.

ষষ্ঠ বেতন (6th Pay Commission Report) কমিশনের রিপোর্ট অনুযায়ী, কমিশন সুপারিশ করেছে যে রাজ্য সরকার তাদের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী সময়ে সময়ে মহার্ঘ্য ভাতার পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারে। অর্থাৎ, কেন্দ্রের মতো সর্বভারতীয় ভোক্তা মূল্য সূচক (AICPI) অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক নয়। কমিশনের ভাষায়:

"কমিশন সুপারিশ করে যে রাজ্য সরকার সময়ে সময়ে রাজ্য সরকারের কাছে উপলব্ধ আর্থিক সম্পদ বিবেচনা করে কর্মচারীদের জন্য প্রদত্ত মহার্ঘ্য ভাতার পরিমাণ নির্ধারণ করতে পারে। মহার্ঘ্য ভাতার পরিমাণ প্রদান/অথবা নির্ধারণ এবং/অথবা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারকে প্রচলিত সর্বভারতীয় ভোক্তা মূল্য সূচক মেনে চলতে হবে না।" (অনুচ্ছেদ ১২.৪)

এই সুপারিশের ফলে রাজ্য সরকারের হাতে ডিএ নির্ধারণের ব্যাপারে স্বাধীনতা থাকছে, যা কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ডিএ-র ব্যবধান তৈরি করছে ।

বর্তমান পরিস্থিতি ও বিতর্ক

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রের তুলনায় অনেক কম হারে ডিএ পান। উদাহরণস্বরূপ, কেন্দ্রীয় কর্মীরা যেখানে ৫৫% ডিএ পান, সেখানে পশ্চিমবঙ্গের কর্মীরা পান মাত্র ১৮% । এই ব্যবধান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কর্মচারী সংগঠনগুলি আন্দোলন করে আসছে। সম্প্রতি, রাজ্য সরকার ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ৪% ডিএ বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছে। তবে, এই বৃদ্ধির পরও কেন্দ্রীয় হারের সঙ্গে রাজ্যের ডিএ-র ব্যবধান অনেকটাই রয়ে গেছে ।

এদিকে, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ নিয়ে আইনি টানাপোড়েন চলছে। কলকাতা হাইকোর্ট সম্প্রতি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে ১ জুলাই, ২০২৫-এর মধ্যে কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ করতে। রিপোর্ট প্রকাশ হলে কর্মচারীরা জানতে পারবেন কমিশন ডিএ নিয়ে কী সুপারিশ করেছিল এবং তার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে আইনি ও আন্দোলনের পথ আরও স্পষ্ট হবে।

বিভিন্ন পক্ষের মতামত ও অভিযোগ

কর্মচারী মহলে অভিযোগ, কমিশনের রিপোর্টে নাকি বছরে দু’বার ডিএ বাড়ানোর সুপারিশ ছিল এবং সেটা AICPI-র ভিত্তিতে হওয়ার কথা ছিল। তবে সরকার সেই সুপারিশ মেনে নিতে নারাজ বলেই রিপোর্ট প্রকাশে গড়িমসি করছে—এমন অভিযোগও উঠেছে। অন্যদিকে, সরকার বলছে, রাজ্যের আর্থিক সামর্থ্য ও কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী তারা ডিএ দিচ্ছে এবং কেন্দ্রীয় হারের সঙ্গে সমতা রাখা সম্ভব নয়।

ডিএ-র হিসাব কিভাবে করা হয়?

কেন্দ্রীয় সরকার সাধারণত সর্বভারতীয় ভোক্তা মূল্য সূচক (AICPI) অনুসারে বছরে দু’বার ডিএ বাড়ায়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ সরকার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, এই সূচক অনুসরণ না করেও ডিএ নির্ধারণ করতে পারে। ফলে, ডিএ-র হার নির্ধারণে স্বচ্ছতা ও পূর্বনির্ধারিত নিয়মের অভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

ডিএ নিয়ে আন্দোলন ও আইনি লড়াই

রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি দীর্ঘদিন ধরে ডিএ-র কেন্দ্রীয় হারের সঙ্গে সামঞ্জস্য চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। একাধিকবার ধর্মঘট, কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলা চলছে, যার ফলে রাজ্য সরকারকে কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।কর্মচারীদের দাবি, কমিশনের রিপোর্টে ডিএ-র হার বৃদ্ধির সুপারিশ স্পষ্ট থাকলেও সরকার সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। আদালতের নির্দেশে রিপোর্ট প্রকাশ হলে, আন্দোলনের নতুন দিক খুলে যেতে পারে।


উপসংহার

ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মহার্ঘ্য ভাতা সংক্রান্ত সুপারিশ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, ডিএ নির্ধারণে রাজ্য সরকারের স্বাধীনতা থাকলেও, কর্মচারীদের দাবি ও আইনি লড়াইয়ের ফলে বিষয়টি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। রিপোর্ট প্রকাশের পরেই স্পষ্ট হবে, রাজ্য সরকার আদৌ কমিশনের সুপারিশ কতটা মানছে এবং কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি পূরণ হচ্ছে কিনা।পরিশেষে, ডিএ নিয়ে এই বিতর্ক সরকারি কর্মচারীদের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলছে এবং রাজ্য-কেন্দ্র পার্থক্য আরও প্রকট করছে। আগামী দিনে রিপোর্ট প্রকাশ ও আদালতের নির্দেশনার উপরই নির্ভর করবে এই সমস্যার সমাধান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here