This Post Contents
সোমবার ওবিসি মামলার শুনানি হল না সুপ্রিম কোর্টে! কবে কাটবে প্রবেশিকা সংক্রান্ত জট?
গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টে পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির (ওবিসি) শংসাপত্র সংক্রান্ত মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শুনানি না হওয়ায় এই বিষয়ে জটিলতা আরও বেড়েছে। এর ফলে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের ফলপ্রকাশও স্থগিত রয়েছে, যা লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যতের উপর অনিশ্চয়তার ছায়া ফেলেছে।
শুনানি কেন হল না?
সুপ্রিম কোর্ট সূত্রে জানা গেছে, সোমবার মামলাটি শীর্ষ আদালতের তালিকার ৩৫ নম্বরে ছিল। প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের বেঞ্চে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিভিন্ন মামলার শুনানি চলে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে তালিকার সব মামলার শুনানি সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। দুপুর ২টো থেকে স্পেশ্যাল বেঞ্চে অন্য মামলার শুনানি শুরু হয়, যা বিকেল পর্যন্ত চলে। ফলে ওবিসি মামলার শুনানি সোমবার আর হল না। তবে, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই এই মামলার শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
মামলার পটভূমি
গত ২৮ জুলাই সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাই কোর্টের একটি রায়ের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। উল্লেখ্য, গত বছর এপ্রিলে কলকাতা হাই কোর্ট ২০১০ সালের পরে জারি করা সমস্ত ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে দেয়। আদালতের নির্দেশ ছিল, সামাজিক, আর্থিক এবং পেশাগত ভিত্তিতে জনগোষ্ঠীর সমীক্ষা করে নতুন ওবিসি তালিকা তৈরি করতে হবে। ২০১০ সালের আগে পশ্চিমবঙ্গে ৬৬টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি হিসেবে গণ্য করা হত। কিন্তু ২০১০ সালে তৎকালীন বাম সরকার ৪২টি এবং ২০১২ সালে তৃণমূল সরকার আরও ৩৫টি জনগোষ্ঠীকে ওবিসি তালিকায় যুক্ত করে। হাই কোর্ট এই তালিকা বাতিল করে জানায়, কেবল ২০১০ সালের আগের ৬৬টি জনগোষ্ঠীর শংসাপত্রই চাকরি ও কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে গ্রাহ্য হবে।
রাজ্য সরকার এই বিষয়ে সমীক্ষা করে নতুন ওবিসি তালিকা জারি করলেও, হাই কোর্ট তাতে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয়। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টে হাই কোর্টের এই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করা হয়।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স ফলপ্রকাশে বাধা
গত বৃহস্পতিবার রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের ফলপ্রকাশ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ওবিসি সংক্রান্ত এই জটিলতার কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, জয়েন্টের মেধাতালিকা বাতিল করে নতুন করে তৈরি করতে হবে। এই মেধাতালিকা ২০১০ সালের আগের ৬৬টি ওবিসি সম্প্রদায়ের তালিকার ভিত্তিতে তৈরি করতে হবে। ওবিসির জন্য ৭ শতাংশ সংরক্ষণ অপরিবর্তিত থাকবে। রাজ্য সরকার এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে আগামী শুনানিতে এই প্রসঙ্গও উঠতে পারে।
ছাত্রছাত্রীদের উপর প্রভাব
এই জটিলতার কারণে লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলপ্রকাশে বিলম্বের ফলে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়াও পিছিয়ে যেয়ে। এই পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন।
কী হতে পারে সমাধান?
সুপ্রিম কোর্টে চলতি সপ্তাহে এই মামলার শুনানি হলে এই জটিলতার সমাধান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ফলপ্রকাশ এবং ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত থাকতে পারে। আমরা এই বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী শুনানির অপেক্ষায় রয়েছি। আপনার যদি এই বিষয়ে কোনও মতামত বা তথ্য থাকে, তাহলে কমেন্টে জানান।