WB DA Arrears:- আগামী সপ্তাহেই ২৫% ডিএ-র বিজ্ঞপ্তি ,রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে। বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে রাজ্য সরকারের তৎপরতা তুঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে ২৫% ডিএ বকেয়া মেটানোর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং অর্থসচিব প্রভাত মিশ্র। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নবান্নে এই পদক্ষেপে কর্মীদের মধ্যে আশার আলো জ্বললেও, কিছু অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের বহু প্রতীক্ষিত বকেয়া ডিএ (Dearness Allowance) নিয়ে অবশেষে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্য সরকার ২৫% ডিএ বকেয়া মেটানোর ব্যাপারে প্রস্তুতি শুরু করেছে। নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং অর্থসচিব প্রভাত মিশ্র!
বৈঠকের মূল সিদ্ধান্ত ও কর্মপরিকল্পনা
- এই বকেয়া ডিএ ২০০৯ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালের জন্য প্রযোজ্য, এবং ৫ম পে কমিশনের ভিত্তিতে হিসাব করা হয়েছে ।
- সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে চলতি মাসেই ২৫% ডিএ বকেয়া মেটাতে রাজ্য সরকার প্রস্তুত হচ্ছে।
- প্রায় ১০ লাখ রাজ্য সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগী এই সুবিধার আওতায় আসবেন।
- সূত্রের খবর, রাজ্য সরকার ৮০% বকেয়া নগদে (Salary Account) এবং বাকি ২০% প্রভিডেন্ট ফান্ডে(GPF) জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। তবে, পেনশনভোগী ও পারিবারিক পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে পুরো বকেয়া নগদে(Pension Account) মেটানো হতে পারে (এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত ঘোষণা হয়নি)।
অর্থসংস্থান ও সরকারি চ্যালেঞ্জ
- ২৫% ডিএ বকেয়া মেটাতে রাজ্য সরকারের প্রায় ১০,০০০-১২,০০০ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।
- এই বিপুল অর্থের জোগান দিতে রাজ্য সরকার বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে এবং কিছু অংশ রাজ্য কোষাগার থেকেও মেটানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
- অর্থ দফতর বাজেটের কিছু অংশ পুনর্বিন্যাস করে ডিএ মেটানোর চেষ্টা করছে, তবে সামাজিক প্রকল্পগুলিতে যাতে প্রভাব না পড়ে, সে বিষয়েও মুখ্যমন্ত্রী বিশেষ নির্দেশ দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন যে, ডিএ মেটানোর জন্য অর্থের জোগান করতে গিয়ে রাজ্যের সামাজিক প্রকল্পগুলির উপর কোনও প্রভাব পড়বে না। একই সঙ্গে, সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনা এড়ানোর জন্যও রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর। এই দ্বিমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কীভাবে বকেয়া ডিএ মেটানো হবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। প্রায় ৪,০০০ কোটি টাকার ঋণের অনুমোদন এর জন্য প্রয়োজন।
কবে আসতে পারে বিজ্ঞপ্তি?
- সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী সপ্তাহেই ২৫% ডিএ বকেয়া নিয়ে সরকারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতে পারে।
- তবে, এর জন্য প্রয়োজনীয় ঋণের অনুমোদন ও অর্থ সংস্থানের বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়া বাকি।
- আগামী ৪ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টে বাকি ৭৫% ডিএ সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে, যেখানে ডিএ কর্মীদের মৌলিক অধিকার কি না, তা নির্ধারিত হবে।
পরবর্তী কী?
- আনুষ্ঠানিক ঘোষণা: পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহে ডিএ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতে পারে, যা লক্ষাধিক কর্মীর জন্য স্বস্তির খবর।
- সুপ্রিম কোর্টের শুনানি: আগামী ৪ আগস্ট, ২০২৫-এ বাকি ৭৫% ডিএ মামলার শুনানি রয়েছে। এই শুনানিতে নির্ধারিত হবে ডিএ কর্মীদের মৌলিক অধিকার কিনা। এই রায়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা রাজ্য।
কর্মীদের মনোভাব
বকেয়া ডিএ পাওয়ার সম্ভাবনায় রাজ্যের কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ থাকলেও, পুরো ২৫% নগদে না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কর্মীরা আশাবাদী হলেও সতর্ক, সরকারের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন।রাজ্য সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ সকলের নজরে রয়েছে, কারণ তারা আর্থিক দায়িত্ব এবং কর্মী কল্যাণের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে চাইছে। এই গল্পের আরও আপডেটের জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন।