এখন NRC নিয়ে রাজ্য রাজনীতি গরমা গরম । নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে অসমে এনআরসি-র প্রথম ‘পরীক্ষা’। তাতে বাদ গিয়েছে ১৯ লক্ষ মানুষের নাম। তা নিয়ে ক্ষোভ জমছে অসমেও। আনন্দ বাজার পত্রিকা জানিয়েছে যে, “সারা অসম বাঙালি যুব ছাত্র ফেডারেশনের দাবি, এর মধ্যে বাঙালি হিন্দুর সংখ্যা ১০ থেকে ১২ লক্ষ। বাঙালি মুসলিম বাদ পড়েছেন দেড় থেকে দু’লক্ষ।” তার মধ্যে রয়েছেন বহু হিন্দু, বহু গোর্খা ও বহু মুসলিমদের নাম ৷
ইতিমধ্যেই NRC ঠেকাতে বিধানসভায় NRC সংক্রান্ত প্রস্তাব ইতিমধ্যেই এনেছে তৃণমূল শাসিত সরকার ৷ প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছে বাম ও কংগ্রেস ৷ অসমে NRC-র তীব্র প্রতিবাদে আগেই সরব হয়েছেন তৃণমূলনেত্রী ৷ গত ৩১ অগাস্টই তিনি জানিয়ে দেন, ‘যাঁরা এই প্রক্রিয়ার জন্য ভুগছেন, তাঁদের সঙ্গে আমি রয়েছি ৷ NRC-র নামে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে একটি বিশেষ দল ৷’ NRC নিয়ে পথেও নামেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘২ কোটি কেন, ২ জনের গায়ে হাত দিন’, চ্যালেঞ্জ কেন্দ্রকে।
কি এই NRC ??
wikipedia এর তথ্য অনুযায়ী “ন্যাশনাল রেজিস্টার অফ সিটিজেন (এনআরসি) হ’ল একটি নিবন্ধ যা ভারত সরকার কর্তৃক পরিচালিত সমস্ত খাঁটি ভারতীয় নাগরিকের সনাক্তকরণের জন্য নাম এবং নির্দিষ্ট প্রাসঙ্গিক তথ্য সম্বলিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। নিবন্ধটি প্রথম ভারতের ১৯৫১ সালের আদমশুমারির পরে প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং এরপরে সম্প্রতি এটি আপডেট করা হয়নি।
উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম ভারতের প্রথম রাজ্য হয়ে উঠেছে যেখানে এনআরসি-র আপডেটের জন্য ১৯৫১ সালের এনআরসি-তে উপস্থিত ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এবং এখনও জীবিত এবং / বা তাদের বর্তমান জীবনযাত্রার নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নেওয়া হচ্ছে রাজ্যের মধ্যে বংশধরদের স্থায়ী বাসস্থান রয়েছে।”
এখন রাজ্য রাজনীতিই গরম হোক বা দেশের রাজনীতিই গরমঈহোক যাই হোক, এখন যদি NRC চালু হয়ে যায় হঠাৎ করে তাহলে আমরা বা আপনারা খুব অসুবিধা পরে যাবো ,তায় যাতে এই অসুবিধা না হয় তার জন্যে কিছু কাজ আমাদেরকে সমস্ত তৈরি করে এখন থেকে রেখে দিতে হবে।
যেহেতু এখন শুধু মাত্র অসমে NRC এখন লাগু হয়েছে তাই আমরা সেই অনুসারে নিজেদের ডকুমেন্ট তৈরি করবো।
তবে শিক্ষিত মানুষদের নিজের ডকুমেন্ট তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গে যারা কম বা অল্প শিক্ষিত তাঁদের কে উক্ত ডকুমেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করা । হ্যাঁ, এটা ঠিক যে বহু পরিবারের সেই সমস্যা হবে না। তারা তাদের পুরানো নথি সংরক্ষণ করে রেখেছেন। কিন্তু সবাই কি? গরীবগুর্বো, দলিত, আদিবাসী কয়েক পুরুষের বহু বাসিন্দার কিচ্ছুটি নেই। কারণ তা সংরক্ষণের প্রয়োজন কখনো অনুভবই করেননি। কটা বড় অংশের গ্রামীণ মানুষের নাম পদবী বয়স ঠিকানা নথিপত্রের কিচ্ছু ঠিক নেই। কারো এই আছে তো সেই নেই, আবার কারো কারো সবই ভুলে ভরা। নাম অন্তর্ভূক্তির তাড়নায় যে যেভাবে পেরেছে নাম তুলে নিয়েছে। তাতে কি ঠিক থাকল আর ভুল থাকল, সেই নিয়ে মাথা ঘামাননি তারা।
ফলে তাঁদের বোঝানো যে সমস্ত ডকূমেণ্টে নাম এক রাখা বা এখন থেকেই কোর্ট এর AFFIDAVIT করে রাখা যে ভুল নাম এবং সঠিক নামের মানুষটি একই।
কারণ সবাইকে বুজতে হবে যে সমস্ত ডকুমেন্ট সঙ্গে রাখা এবং সেই গুলোকে প্রমাণ করা খুব কঠিন কাজ। এর জ্বলন্ত উদাহরণ হল আসাম। তাই আমরা একে অপরের সহযোগিতায় করে এই NRC থেকে অবশ্যয় পরিত্রাণ পাবো।