This Post Contents
Primary Teachers Recruitment- শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মাথাদের খুঁজে বের করতে ভরসা ছিল সিবিআই। সোমবার নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি বসুর বেঞ্চে। সেখানেই সিবিআইয়ের নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। সমস্ত প্রশ্নের মুখে ছিলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী এবং কোর্টে হাজির তদন্তকারী সংস্থার কর্তারা। কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তের মন্থর গতি নিয়ে সোমবার ভরা আদালতে সিবিআইকে ভর্ৎসনা করে বিচারপতি বলেন, ‘যে ভাবে স্কুলে (নবম-দশম) নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই, তা চলতে পারে না। যা করার তাড়াতাড়ি করুন।’ কারণ তদন্তের জন্য আটকে রয়েছে নিয়োগ প্রক্রিয়া !
প্রাথমিক থেকে নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক, গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তভার রয়েছে এই কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে চেপে ধরেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। সরাসরি প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা কবে তদন্ত শেষ করবেন? দুর্নীতিতে পিছন থেকে মদত দিয়েছেন কারা? কারাই বা চক্রান্তকারী? বলছেন ওএমআর প্রভাবিত করা হয়েছে। তাহলে বলুন কারা এর পিছনে জড়িত?
Primary Teachers Recruitment
অন্যদিকে ২০১৬ সালের (Primary Teachers Recruitment)প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে আইন অনুযায়ী অ্যাপটিটিউড টেস্ট ছিল কি না, জানতে চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের হলফনামা তলব করেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন সেটি জমা পড়ে। তা খতিয়ে দেখে আদালত মনে করছে, মাত্র দেড় থেকে দু- মিনিটের ব্যবধানে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ শেষ! তা-ও দু- এক জনের নয়, ১৫টি জেলার প্রত্যেক প্রার্থীর ক্ষেত্রেই এমন ইন্টারভিউ হল?
আদালত আরও জানতে চেয়েছে, অ্যাপটিটিউড টেস্ট ছাড়া কীভাবে শিক্ষক নিয়োগ (Primary Teachers Recruitment) হল? যদি অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়ে থাকে তাহলে এত কম সময়ের ব্যবধানে কীভাবে সম্ভব? আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে আদালতে উপস্থিত হয়ে ইন্টারভিউ নেওয়া পরীক্ষকদের এই সমস্ত প্রশ্নের জবাবদিহি করতে হবে। তাঁদের রুদ্ধদ্বার এজলাসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা ছাড়া আর কেউ থাকবে না এজলাসে। একই সঙ্গে, মামলাকারী চাকরিপ্রার্থীদেরও তলব করা হবে ধাপে ধাপে। দূরের জেলার ওই প্রার্থীদের যাতায়াত খরচ হিসাবে ২ হাজার টাকা ও কাছের জেলার জন্য যাতায়াত খরচ হিসাবে ৫০০ টাকা দিতে হবে পর্ষদকে।
২০১৬ প্রাথমিক নিয়োগে (Primary Teachers Recruitment) অনিয়মের অভিযোগে আরও বিপাকে পড়ল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ইন্টারভিউতে অ্যাপটিটিউড টেস্ট ছাড়াই নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। এই বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বক্তব্য চেয়ে পাঠিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার সেই হলফনামা খতিয়ে দেখে ক্ষুব্ধ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানান, ‘অ্যাপটিটিউড টেস্ট নিয়ে হলফনামা যা দেওয়া হয়েছে তাতে ২০১৬ -এর প্রাথমিকে ওই টেস্ট নেওয়া হয়নি এটা স্পষ্ট। আদতে তিন চারটে প্রশ্ন করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কোনও টেস্ট হয়নি।’
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘অ্যাপটিটিউড টেস্ট না নিয়েই হয়তো গড়ে একটা নম্বর দেওয়া হয়েছে।’ সেই কারণে ওই সময় ইন্টারভিউ নেওয়ার দায়িত্বে থাকা পদাধিকারীদের হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রথম দফায় আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি হুগলি, হাওড়া, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার এবং মুর্শিদাবাদের ইন্টারভিউয়ারদের হাজিরা দিতে হবে। ওই দিন রুদ্ধদ্বার এজলাসে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বয়ান রেকর্ড করবে আদালত।
আরও পড়ুন- WB Primary TET Result 2022-প্রাথমিক পর্ষদের নোটিশ জারি – ২০২২ এর রেজাল্ট এবং আরও বিষয় নিয়ে।
এদিন হুগলি, হাওড়া, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদের ক্ষেত্রে তালিকা খুলে দেখা হয়। তাতেই ওই ঘটনা সামনে আসে। অ্যাপটিটিউড টেস্ট আদৌ হয়েছিল কিনা তা নিয়ে তখনই সন্দেহ প্রকাশ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘হোয়াট ইড অ্যাপটিটিউড টেস্ট( ”What is aptitude test”)’, এই প্রশ্নে বোর্ড অনেক কথা লিখেছে। অথচ যার সঙ্গে বাস্তবে যে অ্যাপটিটিউড টেস্ট নেওয়া হয়েছে তার সঙ্গে মিল নেই। এখানে ইন্টারভিউ আর অ্যাপটিটিউড টেস্ট এক করে দেওয়া হয়েছে। অথচ দুটোর জন্য আলাদা নাম্বার বরাদ্দ আছে।’
অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট আদতে কী? কোনও শিক্ষক ক্লাসে কী ভাবে পড়ুয়াদের বোঝাবেন, সেটারই হাতেকলম পরীক্ষা এই অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট। অনেকের মতে, সে কারণেই ব্ল্যাকবোর্ডের উপস্থিতি নিয়ে আলাদা করে প্রশ্ন তুলেছে হাইকোর্ট। এ দিন আদালতের বক্তব্য, অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট কী – এই প্রশ্নে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ অনেক কথা লিখেছে। যার সঙ্গে বাস্তবে যে ভাবে অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট হয়েছে, তার মিল নেই। এখানে ইন্টারভিউ আর অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট একসঙ্গে নেওয়া হয়েছে। অথচ দুটোর জন্য আলাদা নম্বর বরাদ্দ আছে এবং আলাদা ভাবে প্রার্থীদের নম্বর দেওয়াও হয়েছে।
আরও পড়ুন-WB Primary tet court case-2017-র টেটের OMR শিট নষ্ট করে দিয়েছে প্রাথমিক বোর্ড
আদালতের আগের নির্দেশ মেনে এ দিন প্রতি জেলায় যাঁরা ইন্টারভিউ ও অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট নিয়েছিলেন, তাঁদের নামের তালিকা আদালতে জমা দেয় পর্ষদ। সেই তালিকা দেখে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রতি জেলা থেকে গড়ে ১০ জন করে শিক্ষককে তলব করেছেন। এ দিন হুগলি, হাওড়া, উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ থেকে গড়ে ১০ জন করে শিক্ষককে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টোয় তাঁদের হাজির হতে হবে।